শিরিন আক্তার নামে এক নারী গ্রাহককে কু প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের ঈশ্বরদী শাখার ম্যানেজার সাইদুল ইসলামকে ক্লোজড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সোলালী ব্যাংকের রাজশাহীর জিএম ম্যানেজারকে ক্লোজডের খবর নিশ্চিত করেছেন। ভুক্তভোগী শিরিন আক্তার উপজেলার পৌর শহরের শেরশাহ রোড পূর্ব টেংরী এলাকার রাজিব হাসানের স্ত্রী এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সাবেক সদস্য মৃত আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে। বুধবার ( ১২ জুলাই) নারী গ্রাহককে কু প্রস্তাবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাংকে তুলকালাম কান্ড ঘটে। এসময় ম্যানেজারকে চর-থাপ্পর এবং স্যান্ডেল দিয়ে পেটানো হয়।
সোনালী ব্যাংকের রাজশাহীর জিএম মীর হাসান মো: জাহিদ জানান, বুধবার রাতে ম্যানেজারকে পাবনা প্রিন্সিপাল অফিসে ক্লোজড করা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) রাজশাহীর জিএম অফিসের এবং পাবনা প্রিন্সিপাল অফিসের দুটি টিম ঈশ্বরদীতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন। তদন্তের পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, রাজশাহী অফিসের এজিএম মোর্শদে ইমামের নের্তৃত্বে ২ জন কর্মকর্তা এবং পাবনার প্রিন্সিপাল অফিসের এজিএম খন্দকার আবিদুর রহমানের নের্তৃত্বে ৩ জন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল হতে তদন্তে নেমেছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে কিছুই বলা সম্ভব নয় বলে ওই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
প্রসংগত: সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম কর্তৃক শিরিন আক্তার নামে এক নারী গ্রাহককে কু প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার ( ১২ জুলাই) ব্যাংকে তুলকালাম কান্ড ঘটে। ঘটনা দ্রুত শহরে ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত শত শত মানুষ ব্যাংকের সামনে উপস্থিত হয়ে ম্যানেজারের অপসারণ দাবি করে। পুলিশী হস্তক্ষেপে অপ্রীতিকর ঘটনা ও ব্যাংক ক্ষতির হাত হতে রক্ষা পায়।
ভুক্তভোগী শিরিন জানান, পিতার কল্যাণ ফান্ডের ফরমে স্বার করাতে দুই দিন ধরে ব্যাংকে ঘুরছিলেন তার মা। নানা অজুহাতে ফরমে স্বাক্ষর না করে তাদের হয়রানি করছিলো ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম। মঙ্গলবার মায়ের সাথে আবারও ব্যাংকে আসেন শিরিন। ফরমে স্বাক্ষরের জন্য ম্যানেজারের রুমে গেলে ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম এক পর্যায়ে তাকে অশালীনভাবে অশ্লীল কথা বলে এবং কু-প্রস্তাব দেয়। কু প্রস্তাব রাজি না হলে ফরমে স্বাক্ষর করবেন না বলেও জানান ম্যানেজার। এসময়ে ফরমে স্বাক্ষর না করিয়ে কৌশলে চলে যান শিরিন। বুধবার (১২ জুলাই) পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ব্যাংকে আসেন শিরিন। ফরম নিয়ে ম্যানেজারের রুমে গেলে পুনরায় তাকে কু-প্রস্তাব দেয় সাইদুল ইসলাম। বাসায় গিয়ে মোবাইলে ভিডিও কল দিতে বলেন ম্যানেজার। অশ্লীল কথা ও কু-প্রস্তাবের বিষয়ে ভাষা সংযত করে কথা বলতে বললে ম্যানেজার অসংযত আচরণ করেন।
বৃহস্পতিবার বাকবিতন্ডা এক পর্যায়ে শিরিন স্বামীসহ পরিবারের লোকজন, ব্যাংকে উপস্থিত গ্রাহক ও ব্যাংক কর্মচারীরা ম্যানেজারের কক্ষে প্রবেশ করেন । শিরিন ও পরিবারের লোকজন মিলে ম্যানেজারকে চর-থাপ্পর ও স্যান্ডেল দিয়ে পেটানো হয়।
বুধবার সন্ধ্যায় শিরিন বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ঈশ্বরদী অফিসার ইনচার্জ অরবিন্দ সরকার জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজও দেখেছি। তদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এসব বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হন নি ব্যাংক ম্যানেজার সাইদুল ইসলাম।